মাথায় নতুন কোনও আইডিয়া আসলেই সবার আগে চাই একটা ফেসবুক পেজ। পেজ খোলা তো দুই মিনিটের কাজ। এরপর ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করবেন কী করে? হুড়মুড় করে সবাই লাইক বা ফলো করবে না নিশ্চয়ই। তাই পেজে লাইক বাড়াতে থাকতে হবে ধৈর্য এবং জানতে হবে বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস। আপনাকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ১০টি টিপস শেয়ার করবো। তবে মনে রাখবেন এগুলোই হলো একটি ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার সেরা উপায়।
01. ফেসবুক পেজের নাম নির্বাচন ~ সঠিক নাম পেজকে জনপ্রিয় করার সেরা উপায়
ফেসবুক পেজের জন্য অন্যরকম একটা নাম থাকলে নিজেকে আলাদা করতে পারবেন ঠিকই, তবে ব্যবহারকারীরা পেজটাকে সহজে খুঁজে পাবে না। তাই মাথায় রাখতে হবে মানুষের খোঁজার অভ্যাস। অর্থাৎ মানুষ গুগল বা ফেসবুকে কী লিখে সার্চ করছে সেটা মাথায় রেখে পেজের নাম ও ইউআরএল (URL) ঠিক করুন। এক্ষেত্রে পরিচিত ব্র্যান্ড হলে সে নামেই পেজ খোলা যায়। আর যদি ব্র্যান্ডের চিন্তা মাথায় না থাকে, তবে পেজের নাম বা ইউআরএল যতটা সম্ভব সাধাসিধে রাখুন। এমন একটা ফেসবুক পেজের নাম দিন যেটি সহজেই মানুষ মনে রাখতে পারে।
02. ফেসবুক পেজ সেটাপের সঠিক পদ্ধতি ~ পেজ জনপ্রিয় করার উপায়
অনেকে আবার কোনোরকম পেজ খুলেই লাইক বাড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ডেসক্রিপশন, স্লোগান, ঠিকানা, খোলা থাকার সময়সূচি, ওয়েবসাইট, ফোন নম্বর, লোকেশন এসব ঠিকঠাক না করলে সেই পেজের প্রচার করবে না ফেসবুক। তাই সময় নিয়ে এসব তথ্য সঠিকভাবে ল পূরণ করুন। নিজের মতো করে একটি এনিমেটেড বা ভিডিও কাভার যোগ করতে পারলে বেশ ভালো। কোনও ছবি আপলোড করলে সেটার একটা সুন্দর বর্ণনা লিখতে ভুলবেন না কখনো। পেজের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পোস্টটাকে ‘পিন’ করে রাখুন। যাতে সেটি সবসময় প্রথমে থাকে।
03. লাইক-কমেন্ট করুন ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার সেরা উপায়
নিজের পেজে অন্যের লাইক কমেন্টের আশায় সবসময় হা করে বসে না থেকে পেজের প্রোফাইল থেকে অন্যের পেজের ভালো পোস্টগুলোতে লাইক ও গঠনমূলক কমেন্ট করুন। শুধু শুধু নিজের পেজের নামটা দেখানোর জন্য এক শব্দে বা এলোমেলো কিছু লিখতে যাবেন না। এতে আপনার পেজের প্রতি কারও আগ্রহ থাকবে না। পেজের অর্গানিক গ্রোথ বাড়াতে শুরুতে আপনার পেজটি যেন ‘সবার বন্ধু’ হিসেবেই থাকে। তারপর যখন মানুষ দেখবে আপনি মানুষের কমেন্টে অনেক সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করেন তখন তারাও আপনার পেজ ভিজিট করতে আগ্রহ বোধ করবে। তাই এটিকে ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার সেরা উপায় বলা যায়।
04. কল টু অ্যাকশন ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার সেরা উপায়।
বিজনেস সংক্রান্ত পেজ হলে অবশ্যই উপরের দিকের বারে প্রয়োজনীয় বাটন রাখবেন। কারও ক্ষেত্রে সেটা হতে পারে সেন্ড মেসেজ, কারও বেলায় সাইন-আপ। আবার পেজের ‘শপ’ সেকশনে যখন যথেষ্ট আইটেম থাকবে তখন ‘শপ নাও’ বাটনও যোগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে সেন্ড মেসেজ বা কল বাটনের ব্যবহারই বেশি বলা যায়। তবে সেটা আপনার ফেসবুক পেজ কি বিষয়ে সেটার উপর নির্ভর করবে।
05. পেজের জন্য গ্রুপ গ্রুপ তৈরি ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার উপায়
পেজের ফ্যান-ফলোয়ার বাড়তে শুরু করলে তাদের সবাইকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করুন। তাদের মতামত বা পোস্ট শেয়ার করার জন্য আলাদা করে একটা গ্রুপ বানিয়ে নিতে পারেন। ওই গ্রুপের কারণেও বাড়তে পারে অর্গানিক লাইক।
06. লাইভ ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার নিয়ম
সাধারণ ভিডিও বা পোস্টের চেয়ে ১০ গুণ বেশি রিচ পাওয়া যাচ্ছে ফেসবুক লাইভ ভিডিওতে। তাই পেজের সঙ্গে মানানসই কোনও আইডিয়া পেলে সেটার লাইভ করার চেষ্টা করুন। ফেসবুক এখনও লাইভ ভিডিওগুলোকে তাদের নিউজ ফিডে সবার ওপরে রাখার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে কোনও পণ্য/সেবার ডেমো কিংবা মজার কোনও টিউটোরিয়াল দেখাতে পারেন লাইভে।
07. পোস্টের মাপ ~ পেজ জনপ্রিয় করার সঠিক নিয়ম
একটি আদর্শ অর্গানিক ফেসবুক পোস্টের দৈর্ঘ্য হলো ৪০-৮০টি অক্ষর (ইংরেজিতে, স্পেসসহ)। অল্প কথায় বেশি তথ্য দিতে পারলেই সেটার ‘রিচ’ বাড়িয়ে দেয় ফেসবুক। তাই ফেসবুকে পোস্ট করার সময় খেয়াল রাখবেন কিভাবে অল্প কথায় বেশি তথ্য দেওয়া যায়।
08. ভুল তথ্য নয় ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ১০টি টিপসের সেরা এটি
পেজের এনগেজমেন্ট বাড়াতে উল্টোপাল্টা খবর বা ভুল কিছু পোস্ট করতে যাবেন না। ভুয়া তথ্য নিয়ে ফেসবুক এখন বেশ সরব। ভুল তথ্যের ‘রিপোর্ট’ পেলে দেখা যাবে আপনার পেজটা চলে যাবে লাল তালিকায়। তাই কোন পোস্ট বা তথ্য ফেসবুক পেজে শেয়ার করার সময় কোন ভুল তথ্য শেয়ার করবেন না।
09. সময়জ্ঞান ~ ফেসবুকে পোস্ট করার সঠিক সময়
আপনার গ্রাহক বা পেজের অনুসারীদের অভ্যাস বা রুটিন বুঝে নিন। তারপর সেই অনুযায়ী বেছে নিতে হবে ফেসবুকে পোস্ট করার সঠিক সময়। একেক ধরনের পেজে ব্যবহারকারীদের এংগেজমেন্টের সময়টাও একেক রকম। যেমন খাবার ডেলিভারি সংক্রান্ত পেজ হলে সকাল বা বিকালের সময় পোস্ট করুন, মধ্যরাতে নয়। তাহলে সেই পেজ থেকে ভালো রেজাল্ট পাবেন।
10. ইনস্ট্যান্ট রিপ্লাই ~ ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার সেরা উপায়
আপনার বিজনেস পেজে ইনবক্স করা মাত্রই যেন ক্রেতারা কোনও না কোনও তথ্য পায়, সে জন্য অটোমেটিক রিপ্লাইয়ের ব্যবস্থা রাখুন। তাহলে যারা আপনার পেজ থেকে পন্য/সেবা নিবে। তারা পেজের প্রতি একটা আস্থা রাখতে পারবে। আর যদি ইনস্ট্যান্ট রিপ্লাই দিতে না পারেন তাহলে তারা মেজেক করে বসে থাকবেনা অন্য কোথা থেকে পন্য/সেবা নিয়ে ফেলবে।
আপনার যদি আলাদা ওয়েবসাইট থাকে তবে সেই সাইটের ফেসবুক পেজের জন্য ‘ফেসবুক পিক্সেল’ অপশনটি ব্যবহার করুন। এর জন্য কিছুটা আইটি জ্ঞান থাকা চাই। পিক্সেল বলতে এখানে একটি ছোট কোডকে বোঝানো হচ্ছে যা আপনার ওয়েবসাইটে থাকবে। ওই কোডের মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করা গ্রাহকদের তথ্য পাবে ফেসবুক। সেই অনুযায়ী ঠিক করতে পারবেন ‘টার্গেট অডিয়েন্স’। অর্থাত্ যারা আপনার ওয়েবসাইটে মাঝে মধ্যে ঢুঁ মারে তারাই আপনার ফেসবুকের পোস্ট যেন বেশি বেশি দেখতে পায়, সেটাই করে ফেসবুক পিক্সেল।
