Home সমকালীন তথ্য পরিবেশ দূষণের কারণ, প্রভাব - পরিবেশ দূষণের প্রতিকার

Thumb

পরিবেশ দূষণের কারণ, প্রভাব - পরিবেশ দূষণের প্রতিকার

বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। অতিরিক্ত জনসংখ্যা থাকার ফলে দেশে নানা ধরনের দূষণ ঘটে যাচ্ছে। তার মধ্যে শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, পানি দূষণ, ইত্যাদি নানা ধরনের দূষণ ঘটে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের নানা ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ দূষণের ফলে নানা ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। মূলত মানুষ নানাভাবে পরিবেশকে নষ্ট করে থাকে। আদিমকাল থেকে মানুষ যখন প্রথম আগুন জ্বালাতে শিখলো তখন থেকেই পরিবেশ দূষণ হতে শুরু করল। আস্তে আস্তে যখন মানুষের পরিমাণ বাড়তে থাকলো তখন তারা বসবাসের জন্য বিভিন্ন বন জঙ্গল কেটে ঘরবাড়ি তৈরি করল। আর এভাবে ক্রমে ক্রমে আবাদের জমির পরিমাণ কমতে থাকলো। বর্তমানে বাংলাদেশে অধিক জনসংখ্যা রয়েছে। যার ফলে নানা ধরনের দূষণ ঘটে যাচ্ছে। শিল্প কারখানার ধোঁয়া, কলকারখানার ধোঁয়া, ইটভাটার ধোঁয়া, নানা ধরনের পুরাতন গাড়ির ইঞ্জিনের ধোঁয়া, ইত্যাদি আরো অনেক ধরনের  দূষণ হচ্ছে। যদি মানুষ দূষণ সম্পর্কে সচেতন না হয় তাহলে দূষণের পরিমাণ দিন দিন আরো বাড়বে। পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের অনেক বড় বড় জটিল রোগ দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া পরিবেশ দূষণের ফলে নানাভাবে অর্থনৈতিক অবনতি দেখা দিচ্ছে। অপরদিকে পরিবেশ দূষণের ফলে সারা বিশ্বে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রাকৃতিক সমস্যা। কেননা পরিবেশ দূষণের ফলে নানা ধরনের প্রাকৃতিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যার প্রভাব পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। তাই সকলকেই পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে হবে। তবে পরিবেশ দূষণ রোধ করা যাবে।

পরিবেশ  দূষণের কারণ

বর্তমানে নানা ধরনের কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি। অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশে জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তারা বন  জঙ্গল কেটে সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি করছে। আবার  কেউ কেউ  বাসস্থান তৈরি করছে যার ফলে পরিবেশে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে আসছে। এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ দিন দিন  বেড়ে যাচ্ছে।  পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা। তাছাড়া আরো নানাভাবে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে নিচে কয়েকটি পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।

১. অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি

বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সমস্যা হলো পরিবেশ দূষণ। এর অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। আমাদের দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো খাদ্য সমস্যা।বন জঙ্গল কেটে ফেলার কারণে খাদ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে যার ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আবার বিভিন্ন ধরনের পরিবেশ দূষণের ফলে জনসাধারণের  নানা সমস্যা দেখা যাচ্ছে দিচ্ছে।

বিভিন্ন দেশে নানা কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। মূলত  ১৮-১৯ এ  বিপ্লব, এবং বিশ শতকে তারকা বিপ্লব, তারকা যুদ্ধ, এবং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি জন্য নানা কারণে পরিবেশ দূষণ হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্রগুলো, যেমন রাশিয়া, কানাডা, জাপান, আমেরিকা, সহ অন্যান্য উন্নত দেশগুলো। এছাড়া বিভিন্ন  ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির ফলে নানা কারণে পরিবেশ দূষণ হয়ে যাচ্ছে। একটি দেশের পরিবেশে ভারসাম্য রক্ষার জন্য ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দেখা গেছে অনেক দেশেই নানা কারণে সেসব বনভূমি নেই। অনেক দেশ অনুন্নত হওয়ায় সে দেশে জনসংখ্যা অনেক বেশি সেজন্য ভূমির উপর নানা প্রভাব পড়ে। আমাদের দেশেও অনেক জনসংখ্যা রয়েছে। যার ফলে অনেক বনভূমি কেটে সেখানে বাসস্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। এমনকি জ্বালানি হিসেবেও নানা ধরনের কাঠ বা গাছ কাটা হচ্ছে এবং এতে  কার্বন-ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ ধীরে ধীরে বেড়ে যাচ্ছে। এবং অক্সিজেনের পরিমাণ খুবই কমতে থাকছে যার ফলে পৃথিবীতে উচ্চচাপ দেখা দিচ্ছে। এবং নানা ধরনের জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। মূলত পরিবেশ রক্ষায় গাছপালা অনেক ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই সকলের উচিত বেশি বেশি গাছ লাগানো, তাহলে পরিবেশ দূষণ হবে না।

২. বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য এবং দাহ্য পদার্থের অপব্যবহার

আমাদের নির্মল পরিবেশ দূষণকারীর মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু দাহ্য পদার্থ হলো  কার্বন ডাই অক্সাইড,  সালফার ডাই অক্সাইড, মিথেন, ইত্যাদি এগুলোর প্রতিনিয়ত পরিবেশকে দূষণ করে যাচ্ছে। এমনকি এগুলো থেকে নানা ধরনের ক্ষতিকর জিনিস পরিবেশের বায়ুর সাথে মিশে যাচ্ছে। এতে মানুষের নানা ধরনের মারাত্মক রোগ  দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া আবার কার্বন কণা থেকেও নানা ধরনের ধাতু নির্গত হচ্ছে। যেমনঃ জটিল জৈব যৌগ, ধারি ধাতু, নিউক্লিয় আবর্জনা, রাসায়নিক ধোঁয়া, জীবাশ্ম জ্বালানি, ইত্যাদিও পরিবেশের সাথে মিশে পরিবেশকে নানাভাবে দূষণ করে যাচ্ছে। এতে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে এবং পরিবেশের তাপমাত্রা কে বাড়িয়ে তুলছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হিসেবে  দাহ্য  পদার্থ কে দায়ী করা হয়।

৩. বিভিন্ন রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক এর ব্যবহার

বিভিন্ন ধরনের কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মাটি দূষণ হচ্ছে। উদ্ভিদের ও নানা ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া অধিক সার এবং কীটনাশক ব্যবহারের ফলে এসব সার  বৃষ্টির পানির সাথে মিশে পানিকে নানাভাবে দূষিত করছে। এতে পানিতে থাকা বিদ্যমান প্রাণীদের জীবন সংকটে রয়েছে। তাই অতিরিক্ত কীটনাশক না ব্যবহার করে পরিমিত কীটনাশক ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

৪. বায়ু দূষণ

পরিবেশ দূষণের অন্যতম প্রধান কারণ হলো বায়ু দূষণ। বাতাসে  মূলত  বিভিন্ন ধরনের ভারী ধাতু মিশে  বায়ুমণ্ডল কে দূষণ করে ফেলে। এছাড়া নানা কারণও বায়ু দূষণ হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধাতু তেল, কয়লা, ইত্যাদি থেকে  উৎপন্ন কার্বন-ডাই-অক্সাইড,  বায়ু দূষণ করে থাকে। আবার পুরাতন গাড়ির ইঞ্জিন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকেও বায়ু দূষণ হয়ে থাকে। পরিবেশে বিভিন্ন প্রকার বায়ু দূষণের ফলে মানুষের নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকের নানা ধরনের জটিল রোগ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে ক্যান্সার, সহ আরো নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বায়ু দূষণের ফলে কৃষি উৎপাদনেও নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া কলকারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ধোঁয়া, ইত্যাদি বায়ুর সাথে মিশে বায়ু দূষণ করে থাকে। এতে নানা ধরনের দুর্যোগ দেখা দেয়। তাই সকলের উচিৎ বায়ু দূষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা। তবেই  এই বায়ু দূষণ রোধ করা সম্ভব।

৫. পানি দূষণ

আমাদের অধিকাংশ শিল্প কারখানা গুলো মূলত নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে। শিল্প কারখানার নির্গত ভারী ধাতুগুলো তারা নদীতে ফেলে দেয়। যার ফলে নদী  নানা ভাবে  দূষিত হচ্ছে। নদীতে সেসব ধাতু ফেলার ফলে নদীর পানির ঘনত্ব বেড়ে যাচ্ছে।  আবার অপরদিকে লঞ্চ বা জাহাজ থেকে  নির্গত ধাতু  বা তেল  নদীতে ফেলা হচ্ছে।  সেসব যানবাহনের নির্গত ধাতু  ফেলার ফলে পানি দূষিত হচ্ছে। এবং এতে প্রাণীদের জীবন সংকটে রয়েছে। মূলত পানিতে থাকা মাছ বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদেরও নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আবার বিভিন্ন ধরনের উচ্ছিষ্ট বা আশেপাশের বিভিন্ন বর্জ্যগুলো মানুষেরা নদীতে ফেলে দিচ্ছে। এতে পানি দূষণ হচ্ছে। আবার বিভিন্ন এলাকায় দূষিত পানি  শোধনের  কোন ব্যবস্থা নেই।  এতে পানি সব সময় অপরিষ্কার হয়ে থাকে। আর এসব পানি বিভিন্ন ধরনের প্রাণী যেমন গরু, ছাগল, হাঁস, ইত্যাদি প্রাণীরা যখন পান করবে তাদেরও নানা ধরনের রোগ দেখা দিবে । আবার অনেক চিকিৎসকরা তাদের চিকিৎসার পর ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের  যন্ত্রপাতি গুলো তারা পানিতে ফেলে দিচ্ছে।  এতে পানির অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আবার নদীর অঞ্চলে যাদের বাসস্থান রয়েছে তারা মূলত নদীর পানিকেই নানাভাবে ব্যবহার করে থাকে।  সেসব পানি ব্যবহারে ফলে তাদের নানা ধরনের রোগ  দেখা দিচ্ছে। যেমন আমাশয়,  পাতলা পায়খানা, ডায়রিয়া, সহ নানা ধরনের পানি বাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে।

৬. শব্দ দূষণ

বিভিন্ন প্রকার পরিবেশ দূষণের মধ্যে শব্দ দূষণ হলো অন্যতম। শব্দ দূষণের কারণে মানুষের নানা ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। মূলত শহরে বেশি পরিমাণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। বিভিন্ন যানবাহনের  হর্ণ, মাইকের শব্দ, রেডিও শব্দ,  টেলিভিশন বা টিভির শব্দ ইত্যাদির কারণে শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। আবার দেখা গেছে অনেক শিল্প কারখানার বিকট আওয়াজ, বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির যন্ত্রপাতির শব্দ,  এগুলো মূলত দূষণ ঘটায়। শব্দ দূষণের ফলে মানুষের মস্তিষ্কের বিকৃতিও ঘটে থাকে। তাছাড়া অতিরিক্ত শব্দ দূষণের ফলে তাদের শ্রবণ শক্তির লোপ পায়। আবার দেখা গেছে শব্দ দূষণে ফলে তাদের মানসিক বিপর্যয় ঘটে থাকে। আবার অনেকে  দেখা গেছে যে, অনেক রোগীর আশেপাশে থাকা বিভিন্ন ধরনের শব্দ দূষণের ফলে সে আরো বেশি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এবং তার মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব পড়ে। তাই সকলের উচিত শব্দ দূষণ সম্পর্কে সচেতন থাকা।

৭.যুদ্ধ ও সংঘর্ষ

পরিবেশ দূষণের  অন্যতম কারণ হিসেবে যুদ্ধ এবং সংঘর্ষকে দায়ী করা যেতে পারে। কেননা যুদ্ধের কারণে অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে।  সেগুলো ফলে পরিবেশ দূষণ হয়। যুদ্ধ এবং সংঘর্ষের ফলে জান মালের ব্যাপক  ক্ষতি হয়। আবার অপরদিকে যদি কোন দেশে যুদ্ধ বাঁধে তখন সেখানে নানা ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এবং বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য, এবং আগ্নেয় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। যার  জন্য পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ে, কেননা সেগুলো থেকে নানা ধরনের কেমিক্যাল পরিবেশে নির্গত হয় এতে মাটি এবং বায়ু দূষণ হয়। আবার পরিবেশ দূষণ ও শব্দ দূষণ হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র, পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করার ফলে অনেক ধরনের পরিবেশ দূষণ ঘটে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জাপানে যে পারমাণবিক বোমা তেজস্ক্রিয়তার  কথা উল্লেখ করা হয়েছে তার প্রভাব এখনো বিদ্যমান রয়েছে। জাপানে সেসব পারমাণবিক বোমা  নিক্ষিপ্ত করার কারণে এখনো প্রতিবন্ধী শিশু জন্মগ্রহণ করে।। যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অভিশাপ স্বরূপ।

পরিবেশ দূষণের প্রভাব

পরিবেশ দূষণ বলতে মূলত মাটি, পানি, শব্দ, ইত্যাদি দূষণকে বুঝানো হয়ে থাকে। এসব দূষণ হওয়ার ফলে মানুষের জীবনে নানা ধরনের বিপর্যয় নেমে আসে। কেননা সেগুলো থেকে মানুষের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। মানুষের শরীরে নানা ধরনের  রোগ দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি পরিবেশের নানা ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে। এমনকি সমুদ্রপৃষ্ঠের  উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন ধরনের জলবায়ু পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, সহ নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে।  এমনকি অতিরিক্ত বায়ু দূষণের ফলে এগুলো পরিবেশের বায়ুমণ্ডলের সাথে মিশে এসিড বৃষ্টি হচ্ছে। আবার বিভিন্ন ধরনের জলজ  প্রাণীদের জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হচ্ছে।  মূলত পরিবেশ দূষণের প্রভাব অনেক ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তাই সকলের উচিত পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে সকলকেই অবহিত করা।

পরিবেশ দূষণের প্রতিকার

পরিবেশ দূষণের পরিনাম খুব ভয়াবহ। পরিবেশ দূষণের ফলে মানুষের নানা ধরনের ক্ষতি হচ্ছে।  পাশাপাশি অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।  মূলত পরিবেশ দূষণের কারণে মানব জীবন ধ্বংসের মুখোমুখি হচ্ছে । তাই সব উপাদান গুলোর যদি দূষণ না ঘটে তবে পরিবেশ দূষণ আর ঘটবে না। তাই পরিবেশ দূষণের প্রতিকার সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। নিচে কিছু  প্রতিকার সম্পর্কে  অবহিত করা হলোঃ

১. বনায়ন

বনায়ন পরিবেশ দূষণ রোধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । কেননা বনায়নের  মাধ্যমে পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা পরিমাণ কমতে থাকে। অতিরিক্ত বা বেশি বেশি গাছ লাগানোর ফলে পরিবেশে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর পরিমাণ কমতে থাকে এবং অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়তে থাকে । এতে করে মানুষেরা ভালোভাবে, সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে পারে। এতে কোনো  সমস্যা দেখা যায়  না।  অতিরিক্ত গাছ লাগানোর ফলে মানুষের জ্বালানির সমস্যা, খাদ্যের সমস্যা, দেখা দেয় না।  আবার গাছ লাগানোর ফলে মানুষের নানা ধরনের অভাব পূরণ হচ্ছে। পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রও  তৈরি হচ্ছে । আবার বনায়নের মাধ্যমে পরিবেশে দূষণ কম হচ্ছে।  তাই সকলের উচিত পরিবেশ দূষণ রোধ করতে বেশি বেশি গাছ লাগানো।

২. পানি দূষণ রোধ করা

পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হলো পানি দূষণ। পানি দূষণের ফলে মানুষের নানা ধরনের রোগ দেখা দিচ্ছে । যদি মানুষ  এ সম্পর্কে সঠিকভাবে জানতে পারে , তবে  পানি দূষণ কমবে।আবার  বিভিন্ন বড় বড় শিল্প কারখানা, বা কল কার কারখানার  বজ্রগুলো, পানিতে না ফেলে তারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে যদি ফেলে দেয় তাহলে পানি দূষণ আর হবে না।  এতে পানিতে থাকা জলজ প্রাণী এবং উদ্ভিদেরও কোন ক্ষতি হবে না। এমনকি নদী তীরবর্তী স্থানে বসবাসকৃত মানুষরা  বিশুদ্ধ পানি পাবে।

৩. শব্দ দূষণ রোধ করা

শব্দ দূষণ রোধ করলে পরিবেশ অনেক সুস্থ থাকে। মূলত শহরে অনেক শব্দ দূষণ হয়ে থাকে বিভিন্ন গাড়ির হর্ন, ইত্যাদির মাধ্যমে শব্দ দূষণ হয়। তাই সকলের উচিত বিভিন্ন গাড়ির হর্ন বা  রেডিও, টেলিভিশনে,  আওয়াজ কম শোনা এতে পরিবেশ সুন্দর থাকে। পাশাপাশি মানুষেরও তেমন কোনো সমস্যা হয় না। আবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বেশি আওয়াজযুক্ত  বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার না করা । এতে শব্দ দূষণ কম হবে।

৪. জনসচেতনতা সৃষ্টি

বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকের মাধ্যমে সকলকে একত্রিত করে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হলে পরিবেশ দূষণ কমবে।  মানুষের মনে পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে ধারণা জন্ম নিবে এবং তারা বুঝতে পারবে পরিবেশ দূষণের ফলে কি কি সমস্যা হয় এবং এতে পরবর্তী প্রজন্মের কি ক্ষতি হতে পারে, তা তারা উপলব্ধি করতে পারবে। এবং তারা বুঝতে পারবে পরিবেশ  দূষণের কারণে পৃথিবীর কিরূপ পরিবর্তন হচ্ছে। তাই বিভিন্ন সেমিনার বা মাইকিং করে পরিবেশকে কিভাবে দূষণ রোধ করা যায় তা সম্পর্কে  জনসচেতনতা সৃষ্টি করা সকলের দায়িত্ব। তবে পরিবেশ দূষণ আর হবে না।

৫. প্রাকৃতিক সার ব্যবহার

মূলত অতিরিক্ত কীটনাশক এবং সার ব্যবহারের ফলে মাটির দূষণ হচ্ছে এতে উদ্ভিদের নানা ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। তাই সকলের উচিত অতিরিক্ত কীটনাশক এবং  রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করা। এতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। পাশাপাশি উদ্ভিদেরও কোন ক্ষয়ক্ষতি হবে না।  প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করলে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে। এবং ফসলের অনেক উন্নতি হবে। এতে মানুষের খাদ্য সমস্যা দেখা দিবে না। এবং মানুষের বিভিন্ন রোগ ও হবে না। তাই সকলের উচিত রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করা।

উপসংহার

পরিবেশ মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন। সে পরিবেশ  যদি দূষিত হয় তবে মানুষ সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে না। পরিবেশ মানুষের নানা ধরনের উপকার করে থাকে। যদি পরিবেশ  দূষিত হয় তাহলে মানুষসহ উদ্ভিদ এবং পশু পাখির  নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে । এবং পরিবেশ দূষণের ফলে জলবায়ু  পরিবর্তন হয় এতে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দেয়,এতে বিভিন্ন ক্ষতি হয়। পরিবেশকে যদি সুস্থ রাখা যায় তবে পুরো বিশ্ব তথা পৃথিবী সুস্থভাবে  থাকতে পারে। পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না। পরিবেশকে সুস্থ রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এমনকি আইনি পদ্ধতির প্রয়োগ করেও পরিবেশকে দূষণ রোধ করতে হবে।  পরিবেশ দূষণের ফলে কি কি ক্ষতি হয় তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষদেরকে বুঝাতে হবে। কারণ মানুষরা যদি সচেতন না হয় তাহলে পরিবেশ কখনোই দূষণ  মুক্ত হবে না । তাই পরিবেশকে সবসময় সুস্থ ও সুন্দর রাখার জন্য , সমাজের সকল নাগরিকের দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করতে হবে।