নতুন ফোনের দাম বেশি হওয়ায় কম দামে ভালো ফোন এর আশায় ব্যহহৃত অর্থাৎ সেকেন্ড হ্যান্ড ফোন কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন অনেকেই। আজকের এই পোস্টে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার ক্ষেত্রে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা দরকার সেসব বিষয় সম্পর্কে। সেকেন্ড হ্যান্ড অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার অনেক সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। এই পোস্টে ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ফোন কেনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ জানবেন।
মোবাইল কেনার রশিদ দেখুন
পুরাতন মোবাইল কেনার আগে আপনি তার কেনা রশিদ দেখুন। কারন বর্তমানে চুরি করা ফোন বিক্রি নিয়ে বেশ সমস্যা বেড়েছে। যেকোনো দোকান হোক বা অনলাইনে পাওয়া কারো কাছ থেকে পুরোনো ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের সাবধান থাকা উচিত। চুরির ফোন কেনার ফলে আইনি ব্যবস্থার সম্মুখীন পর্যন্ত হতে পারেন। কোনো ব্যক্তি যদি তার বিক্রি করা ফোন কেনার রশিদ দেখাতে না পারে, তাহলে উক্ত ফোন কেনা থেকে বিরত থাকা উত্তম। কারন যদি ফোনটি চুরি করে এনে আপনার কাছে বিক্রি করে আর আপনি যদি কম দাম দিয়ে কিনে ফেলেন। সেক্ষেত্রে যার ফোন সে যদি মোবাইল চুরির জিডি করেন তাহলে কিন্তু আপনি ফেঁসে যাবেন। তাই পুরাতন মোবাইল কেনার ক্ষেত্রে সাবধানে কিনুন।
আরো ভালো হয় যদি ফোন কেনার সময় বক্সসহ প্রদান করা হয়। ফোনের বক্সের সাথে ডিভাইসের আইএমইআই কোড মিলিয়ে দেখুন। ফোনের আইএমইআই ও বক্সের আইএমইআই কোড না মিললে সে ক্ষেত্রে ঐ ফোন কেনা থেকে বিরত থাকুন। যেকোনো ফোনে *#06# ডায়াল করে আইএমইআই নাম্বার দেখতে পারবেন।
ফিজিক্যাল ড্যামেজ চেক করুন
আমার মনে হয় স্মার্টফোনের মত অতিরিক্ত ব্যবহার হয় এমন বোধহয় আর অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস নেই। অতিরিক্ত ব্যবহার করার কারণে অনেক সময় মোবাইল ফোন ফিজিক্যাল ড্যামেজ এর শিকার হয়, যার জন্য পুরোনো মোবাইল কেনার আগে অবশ্যই মোবাইল ফোনে কোনো ধরনের ফিজিক্যাল ড্যামেজ আছে কিনা তা ভালো করে চেক করা জরুরি।
আপনার যদি কোনো পুরোনো মোবাইল ফোন কেনার জন্য পছন্দ হয়ে যায়, তবে ফোনের ব্যাকে কোনো ধরনের স্টিকার বা স্কিন থাকলে তা তুলে ফেলে ফোনে কোনো ধরনের ড্যামেজের প্রমাণ আছে কিনা তা চেক করুন। ফোনের স্ক্রিনে কোনো ধরনের গুরুতর সমস্যা বা স্ক্র্যাচ আছে কিনা তা চেক করতে পারেন টেম্পরারি গ্লাস খুলে ফেলে।
ব্যবহৃত ফোন কেনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সেরা উপায় হলো নিজে গিয়ে ভালো করে মোবাইল ফোন দেখে কেনা। সরাসরি গিয়ে ফোন কিনলে তা চেক করে নেওয়ার সুযোগ থাকে। তাই ভালো হয় সরাসরি অনলাইন থেকে পুরোনো ফোন অর্ডার করা থেকে বিরত থাকা। কারন অনলাইনে চুরি করা ফোন নাকি কেমন ফোন তা বুঝতে পারবেন না। তাই চেষ্টা করবেন মোবাইল দেখে কেনার জন্য।
আরো পড়ুনঃ শরীরের যে ৮টি স্থানে স্মার্টফোন রাখলে ক্ষতি হয়।
অরিজিনাল চার্জার ও কেবল
ফোনের বক্সে থাকা চার্জার এর চেয়ে বিশ্বস্ত কোয়ালিটির চার্জার কোথাও হয়না। তাই পুরোনো ফোন কেনার সময় অবশ্যই ফোনের সাথে থাকা অরিজিনাল চার্জার ও ডাটা কেবল দাবি করুন। এর ফলে ফোনের সিকিউরিটি সম্পর্কে অধিক নিশ্চিত হওয়া যাবে, আবার নতুন চার্জার কিনতে আপনাকে বাড়তি টাকাও খরচ করতে হবেনা। বিক্রেতা যদি চার্জার প্রদান করতে ব্যার্থ হয়, তবে তার দাম নিয়ে নেগোসিয়েশন করতে পারেন।
মোবাইল ফোন রিপেয়ার করা হয়েছে কিনা জানুন
ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেনার আগে মোবাইল ফোন রিপেয়ার করা হয়েছে কিনা তা জানা বেশ জরুরি। কোনো মোবাইল ফোন যদি অনেকবার রিপেয়ার করা হয়ে থাকে, তাহলে তা কেনা থেকে বিরত থাকা উচিত। মোবাইল ফোন রিপেয়ার হয়েছে কিনা তা বুঝার সহজ উপায় হতে পারে মোবাইল ফোনের ফ্রেম ও ডিসপ্লে। মোবাইল ফোন যদি আনপ্রফেশনাল টেকনিশিয়ান দ্বারা রিপেয়ার করা হয়ে থাকে, তবে খুব সহজে রিপ্লেস করা গ্লাস দেখতে পাবেন। যেসব মোবাইল ফোন একাধিকবার রিপেয়ার করা হয়েছে, উক্ত ফোনগুলো থেকে দূরে থাকা সবচেয়ে উত্তম।
মোবাইল ফোনের সকল কম্পোনেন্ট ঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা চেক করুন
সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরাতন মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই ধৈর্য সহকারে মোবাইল ফোন চেক করতে হবে। মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার পর নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো ঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা ভালো চেক করুন।
- ১/ পাওয়া বাটন ও ভলিউম বাটন
- ২/ চার্জিং পোর্ট (চার্জ হচ্ছে কিনা চেক করুন)
- ৩/ ব্যাক ও ফ্রন্ট ক্যামেরা
- ৪/ কলের সময় প্রক্সিমিটি সেন্সর কাজ করে কিনা
- ৫/ ব্রাইটনেস ফুল করলে ডিসপ্লে ঠিকভাবে কাজ করে কিনা
- ৬/ স্পিকার
- ৭/ মাইক্রোফোন
মোবাইল ফোন কত পুরোনো তা চেক করুন
পুরোনো মোবাইল ফোন কেনার ক্ষেত্রে উক্ত মোবাইল ফোনের বয়স জানতে পারবেন বিক্রেতার কাছ থেকে প্রাপ্ত মোবাইল ফোন কেনার রশিদ থেকে৷ এছাড়া মোবাইল ফোনের অবস্থা দেখেও ফোন কত সময় ধরে কি পরিমাণে ব্যবহৃত হয়েছে তা অনেকটা ধারণা করা যায়। চার্জার, বক্স, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যদি বিক্রেতা প্রদান করতে না পারে তাহলে উক্ত মোবাইল ফোন না কেনা শ্রেয়।
এছাড়া যে মোবাইল ফোনটি কিনতে যাচ্ছেন উক্ত মোবাইল ফোন যদি বেশি আগের মডেল হয়ে থাকে, তবে সেটি কেনা থেকে বিরত থাকুন। বেশি আগের মোবাইল ফোনগুলো অনেক আগে তৈরী হয়ে থাকে, যার ফলে সময়ের সাথে সাথে মোবাইল ফোনগুলোর পারফরম্যান্স বর্তমান সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে উঠতে পারেনা।
শেষ কথা-
উল্লেখিত বিষয়গুলো অনুসরণ করে ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনলে ঠকবেন না আশা করি। পোস্টটি শেয়ার করে পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের এই বিষয়ে জানাতে পারেন যা পরে তাদের কাজে আসবে। ভালো লাগলে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।